সুপ্রাচীন জ্ঞান ভান্ডারে নিহিত জীবনের মূল্যবোধের মধ্য দিয়েই বেঁচে থাকার চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব। ভারত তার সমৃদ্ধ সংস্কৃতিকে পুঁজি করেই গোটা বিশ্বকে পথ দেখাতে পারে । মঙ্গলবার ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মহারাজা বীরবিক্রম অডিটোরিয়ামে রূপান্তরমূলক ও স্থিতিশীল সমাজের জন্য উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণা’ শীর্ষক তিনদিন ব্যাপী জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডা মানিক সাহা এমনই বলেছেন । শিক্ষা ক্ষেত্রে গবেষণাধর্মী কার্যকলাপে তিনি বিশেষভাবে জোর দিয়েছেন । মুখ্যমন্ত্রীর কথায়,
বিশ্ববিদ্যালয় হল ভবিষ্যতের গবেষণাগার। গবেষণা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ভাবা যায় না । তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমের মধ্যে গবেষণার বিষয়বস্তু থাকা প্রয়োজন ।
ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেল আয়োজিত সম্মেলন আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে । অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান সৃষ্টি ও বিস্তারের মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্মের জীবন, নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে।
শিক্ষা ব্যবস্থার পাঠ্যক্রমে বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের সম্ভাব্য উপায়গুলির উপর গুরুত্ব দিতেও তিনি জোর দেন । মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ। সেই সাথে রয়েছে অসংখ্য পরিবেশগত হটস্পট। তিনি ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ অঞ্চলের বৈচিত্র্যময় সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক, জাতিগত, পরিবেশগত এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর দৃষ্টি রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ভোক্যাল ফর লোক্যাল’ নীতি বাস্তবায়নে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানান। মুখ্যমন্ত্রী স্থিতিশীল মূল্যবোধের ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চলের ভূমিকা নিয়ে গবেষণার জন্য ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে বহু বিশ্ব সম্মেলনে ভারত তথাকথিত উন্নত দেশগুলির দ্বারা নির্দেশিত হত। যেকোনও গুরুত্বপূর্ণ গ্লোবাল ফোরামে ভারতের আওয়াজ তোলা খুবই কঠিন। ছিল। কিন্তু বর্তমানে দেশের মর্যাদা ক্রমশ বাড়ছে। আর সেটা সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদৃষ্টি, অবিরাম প্রচেষ্টা ও দৃঢ় ব্যক্তিত্বের জন্য। এখন ভারত যে কোনও গ্লোবাল ফোরামে গর্বিত ও স্বাধীনভাবে তার মতামত ব্যক্ত করতে পারছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদির দক্ষ নেতৃত্বে ভারত সফলভাবে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে নেতৃত্ব দিয়েছে।
অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গঙ্গাপ্রসাদ প্রসেইন বলেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী মানসিকতা গড়ে তোলা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেল গঠিত হয়েছে এবং সেখানে বিভিন্ন গবেষণামূলক কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এই সম্মেলন ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরী করবে। অনুষ্ঠানে এছাড়া বক্তব্য রাখেন ব্যাঙ্গালুরুর অশোকা ট্রাস্ট ফর রিসার্চ ইন ইকোলজি এন্ড এনভাইরনমেন্ট প্রতিষ্ঠানের প্রফেসর একলব্য শর্মা, ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ডিন প্রফেসর বাদল কুমার দত্ত, কলা ও বাণিজ্য বিভাগের ডিন প্রফেসর শ্যামল দাস, সম্মেলনের আহ্বায়ক ড. সপ্তর্ষি মিত্র। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মেলনের ডিরেক্টর প্রফেসর অজয় কৃষ্ণ সাহা। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার ড. দীপক শর্মা।