প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গদর্শনে ও তাঁর বিকাশমুখী চিন্তাধারায় মানুষের সার্বিক কল্যাণে কাজ করছে কেন্দ্র ও রাজ্যের ডাবল ইঞ্জিন সরকার। আর সেই বিকাশমূলক দিকগুলি নিয়ে বক্সনগর ও ধনপুরের উপনির্বাচনে মানুষের কাছে গিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তাই দুই কেন্দ্রের মানুষই দুহাত ভরে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছেন ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থী তফাজ্জল হোসেন ও বিন্দু দেবনাথকে। গণতন্ত্রের মাধ্যমে কিভাবে নির্বাচন করা যায় সেটা এবার করে দেখিয়েছেন বক্সনগর ও ধনপুরের মানুষ।
শুক্রবার বক্সনগর ও ধনপুর কেন্দ্রে বিজেপি মনোনীত প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর বিজেপি প্রদেশ কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা। এই জয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা এবং প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর বক্সনগর ও ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী ৮ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার ফলাফল ঘোষিত হয়। ঘোষিত ফলাফলে জনতার রায়ে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়যুক্ত হন ভারতীয় জনতা পার্টির দুই প্রার্থী তফাজ্জল হোসেন (বক্সনগর) ও বিন্দু দেবনাথ (ধনপুর)। এর অব্যবহিত পরেই দলের প্রদেশ কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের উপনির্বাচন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। বিশেষ করে বক্সনগরে বিজেপি কখনো জয়ের মুখ দেখতে পারেনি। ধনপুর কেন্দ্রে গতবার বিজেপি জয়ী হয়েছে। মূলত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গদর্শন ও রাজ্যের উন্নয়নে তাঁর চিন্তাভাবনাকে সামনে রেখে এবারের নির্বাচনে মানুষের কাছে গিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। কেন্দ্র ও রাজ্যের ডাবল ইঞ্জিন সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছেছে দল। সংখ্যালঘু অংশের মানুষের অধ্যুষিত বক্সনগরে এতদিন ধরে যে বিভেদের রাজনীতি হয়েছিল তার জবাব দিয়েছে মানুষ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই ধরণের বিভেদের রাজনীতি – একটা বিশেষ শ্রেণীকে আলাদা করে ভোট বাক্সে পরিণত করা – এর বিরুদ্ধে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো ত্রিপুরায়। প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শন – সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস, সব কা প্রয়াস চিন্তাভাবনাকে মানুষ মন থেকে গ্রহণ করেছে। তাই তো এবারের নির্বাচনে সংখ্যালঘু অংশের মানুষ দুহাত ভরে ভোট দিয়ে বক্সনগরে তফাজ্জল হোসেনকে জয়ী করেছেন। একইভাবে ধনপুরে বিন্দু দেবনাথের বিপুল জয়ের পেছনে সংখ্যালঘু এবং জনজাতি অংশের মানুষের অবদান রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা আরো বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। গণতন্ত্রের মাধ্যমেই নির্বাচনের লড়াইয়ে নামে। দলের কার্যকর্তাদেরও সেভাবে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তাইতো ২০২৩ এ মানুষের আশীর্বাদ নিয়ে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসেছে ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার। সেই জায়গায় বিরোধীরা বলছেন রাজ্যে গণতন্ত্র নেই। কিন্তু মানুষ সাক্ষী রয়েছে। সিপাহীজলা জেলার বক্সনগরের মতো জায়গায় শান্তিপূর্ণ ভোট সেটা প্রমাণ করেছে। বিজেপির প্রতি মানুষের আন্তরিক সমর্থন এই ভোটে প্রমাণিত হয়েছে। উৎসবের মেজাজে ভোট হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশের রাজনীতির পরিভাষায় বদলে দিয়েছেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী শান্তিপূর্ণ ভোটের মাধ্যমে ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত দুই প্রার্থী জয়ী হওয়ায় রাজ্যবাসী সহ বক্সনগর ও ধনপুরের আপামর জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান। এর পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের কর্মী, আধিকারিক, ভোটের কাজে নিযুক্ত আরক্ষা কর্মী সহ সকলকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া ভোটের কাজে অক্লান্ত পরিশ্রম করার জন্য দলের জেলা সভাপতি, মন্ডল সভাপতি, বুথ স্তরের সভাপতি, কার্যকর্তা সহ মন্ত্রী ও বিধায়কদের শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানান।
বক্সনগর বিধানসভা কেন্দ্রে ইতিহাস গড়লো ভারতীয় জনতা পার্টি। এই প্রথম এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হলেন বিজেপির কোন জনপ্রতিনিধি। আর সেই ইতিহাস রচনা করলেন বিজেপি মনোনীত প্রার্থী তফাজ্জল হোসেন। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে এই বক্তব্যই তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য বক্সনগর ও ধনপুরে দলের দুই প্রার্থী জয়ী হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। প্রশাসনিক কাজের ব্যস্ততার মধ্যেও যেভাবে উপনির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত দুই প্রার্থীর জন্য সময় দিয়েছেন এজন্য মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, দলের প্রদেশ মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী, বক্সনগর কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত তফাজ্জল হোসেন এবং ধনপুর থেকে নির্বাচিত বিন্দু দেবনাথ।
পরবর্তী সময়ে প্রদেশ কার্যালয় প্রাঙ্গন থেকে আগরতলা শহরের বুকে একটি বিজয় মিছিল সংঘটিত করা হয়। মিছিলে সামিল হন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা, প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য সহ দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। এতে পা মেলান দলের সকল স্তরের হাজার হাজার কার্যকর্তা।