সিধাই মোহনপুরের ৬০ বৎসর বয়সী সাবিত্রী সরকার দীর্ঘদিন ধরে হার্টের সমাস্যায় ভুগছিলেন। তার বুকে ব্যথা হত ও তিনি হাঁপিয়ে যেতেন। মাঝে মাঝেই পেটে অলসারের কারণে ম্যালিনায় ভুগে হাসপাতালে রক্ত নিতে ভর্তি হতেন। জিবি হাসপাতালে থাকা কালে পরীক্ষায় তাঁর হৃদযন্ত্রের এয়োটিক ভালব বিকল হয়ে গেছে বলে ধরা পরে। সিটিভিএস বিভাগে তার অতি সত্বর এয়োটিক ভালব প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয়। সমস্যা হল এয়োটিক ভালব প্রতিস্থাপন করলে সারা জীবন এন্টিকোয়াগুলেশন মেডিসিন খেতে হয় তাতে তার বরাবর পেট থেকে রক্তপাত ও ম্যালিনার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার চিন্তা থাকবে। অবশেষে তার ক্ষেত্রে বিশেষ টিসু ভালব প্রতিস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই বিশেষ ব্যবস্থায় রোগীনিকে সারাজীবন এন্টিকোয়াগুলেশন মেডিসিন খাওয়ার প্রয়োজন নেই এবং তার ফলে অহেতুক রক্তপাতের সম্ভাবনা কমে যায়। সেই অনুসারে গত ৪ আগস্ট ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্যমে সফলভাবে এই বিশেষ পারসিভাল টিসু ভালব প্রতিস্থাপন করা হয়। উন্নতমানের এই টিসু ভালব সুচারলেস বা কোন সুতোর ব্যবহার ছাড়াই তার হার্টের মহাধমনীর উৎপত্তিস্থলে প্রতিস্থাপন করেন ডাঃ কনক নারায়ণ ভট্টাচার্য এর নেতৃত্বে একটি কার্ডিয়াক সার্জারির টিম। ছয় ঘন্টা ব্যাপী এই অস্ত্রোপচার টিমে ছিলেন কার্ডিয়াক এনেস্থিসিয়া বিষেশজ্ঞ ডাঃ মণিময় দেববর্মা, ডাঃ জয়দীপ দেবনাথ, ডাঃ সুরজিৎ পাল এবং সুজন সাহু, সুদীপ্ত মন্ডল, রতন মন্ডল, জয়দীপ চক্রবর্তী, অমৃত মুড়াসিং, অর্পিতা সরকার, অন্নবাহাদুর জমাতিয়া, সত্যজিৎ দেবনাথ সহ টেকনোলজিস্টদের টিম। বর্তমানে রোগীনির অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে এবং তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেন ও খাবার খাচ্ছেন। উল্লেখ্যযোগ্য, এই বিশেষ সুচারলেস পারসিভাল টিসু ভালব সমগ্র উত্তরপূর্বাঞ্চলে আগরতলা সরকারি মেডিকেল কলেজ ও জিবিপি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো প্রতিস্থাপিত হল। এর আগে পূর্ব ভারতের কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল। আয়ুষ্মান ভারত যোজনার আওতায় রোগী কল্যাণ সমিতির আনুকুল্যে বিনামূল্যে এই অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানান জিবিপি হাসপাতালের সুপারনিটেনডেন্ট ডাঃ শংকর চক্রবর্তী, ডাঃ কনক নারায়ণ ভট্টাচার্য, ডাঃ মণিময় দেববর্মা ও ডাঃ সুরজিৎ পাল সহ অন্যান্যরা।